ম্যানহাটনের টাইমস স্কোয়ারে প্রথমবারের মতো তিথি অনুযায়ী দুর্গা উৎসবের উদ্বোধনী দিনটি ছিল সংস্কৃতির এক অসাধারণ মিলনক্ষেত্র।
শহরের প্রাণকেন্দ্রে বিপুল জনসমাগমে উৎসব পালিত হয়। সন্ধ্যা রঙিন করে তোলে নৃত্যাঞ্জলির প্রাণবন্ত নৃত্য পরিবেশনা ও ভারতীয় বিদ্যা ভবন এর গারবা, জয় সরকার ও লোপামুদ্রা মিত্রের মনোমুগ্ধকর সঙ্গীতানুষ্ঠান এবং ঐতিহ্যবাহী আচার-অনুষ্ঠান, যা দর্শকদের সরাসরি পৌঁছে দেয় কলকাতার মাড্ডক্স স্কয়ারের এবং ঢাকেশ্বরী মন্দির এর আবহে।
একাধিক বিশিষ্ট অতিথি ও বিদেশি প্রতিনিধির উপস্থিতিতে এই উৎসব পরিণত হয় এক সত্যিকারের আন্তর্জাতিক উদযাপনে, যা বিশ্বমঞ্চে বাঙালির সমৃদ্ধ ঐতিহ্যকে তুলে ধরে।
দ্বিতীয় দিনের মূল আকর্ষণ ছিল রিমলি রায় এর সুরতি ট্রুপে এর ইংরেজিতে রামায়ণ ব্যালে পরিবেশনা। নৃত্যাঞ্জলি র মহিষাসুরমর্দিনী মোহিত করে উপস্থিত প্রায় ৫০০০০ দর্শক কে। দেয়াশিনি রায় এর সুরমূর্ছণা তে ভেসে যায় গোটা টাইমস স্কোয়ার প্রাঙ্গন – প্রমান করে সংগীতের সত্যি কোনো ভাষা হয়না। প্রতিমা শিল্পী কলকাতার কুমারটুলি র বিখ্যাত শিল্পী প্রদীপ রুদ্র পাল। পূজা র প্রধান পুরোহিত এর দায়িত্ব পালন করেন শ্রী কেশব চট্টোপাধ্যায়।
মুখ্য উপদেষ্টা মৃদুল পাঠক আয়োজকদের ধন্যবাদ জানান এই উদ্যোগের জন্য বিশেষ করে পৃষ্টপোষক বাংলার দুই নক্ষত্র কালী প্রদীপ চৌধুরী ও চন্দ্রশেখর ঘোষ। মিলন অয়ন স্বাগতিক ভাষণ দেন।
এ ছাড়া রঞ্জনী, আড্ডা, রবীন্দ্র একাডেমী, বহ্নিশিখা ও ওম শক্তি মন্দির মনোজ্ঞ পরিবেশনা করেন। বাংলা সঙ্গীত এর দোলায় দর্শক এর ভাসিয়ে নিয়ে যান দেবারতি ভট্টাচার্য, ঋতুপর্ণা ব্যানার্জী, কৃষ্ণা তিথি ও শাহ মেহবুব।
দূর্গা পূজা উনেসকো স্বীকৃতি পাওয়ার পর থেকে আন্তর্জাতিক মঞ্চে পূজাকে নিয়ে আসার ভাবনা ছিল আয়োজক দের। সেই উদ্দেশেই নিউ ইয়র্ক অঞ্চল এ ৬০টির মতো পুজো হওয়া সত্ত্বেও টাইমস স্কয়ারে এর মতো ঐতিহ্যবাহী জায়গায় উৎসব এর পরিকল্পনা নেয়া হয় – সব রকম ভাবে সাহায্য করেছেন নিউ ইয়র্ক মেয়র্স অফিস। বাঁধভাঙা ভিড় প্রমান করে এই উদ্যোগের সাফল্য।
দুদিনের এই আনন্দ যজ্ঞ শেষ হয় সিঁদুর খেলা , ধুনুচি নাচ ও “আসছে বছর আবার হবে” ধ্বনির মধ্যে দিয়ে। বিশ্বের মিলনতীর্থে বাংলা সংস্কৃতি ও পরম্পরা র এক উজ্জ্বল নিশান রেখে গেলো টাইমস স্কোয়ার দূর্গা উৎসব এসোসিয়েশন এর এই প্রয়াস।