০২:৩৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২১ অক্টোবর ২০২৫, ৬ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

আল আরাফাহ ব্যাংকের ৫৫০ কর্মকর্তা চাকরিচ্যুত, পুনর্বহালের দাবি

চাকরি পুনর্বহালের দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন আল আরাফাহ ইসলামী ব্যাংকের (এআইবি) চাকরিচ্যুত কর্মকর্তারা। গত মঙ্গলবার (২২ জুলাই) আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংকের ৫৫০ কর্মকর্তাকে অব্যাহতি দেয় ব্যাংক কর্তৃপক্ষ।

বুধবার (২৩ জুলাই) রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন চাকরিচ্যুত ব্যাংক কর্মকর্তারা।

অবস্থান কর্মসূচিতে আল আরাফাহ ব্যাংকের চাকরিচ্যুত শতাধিক কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন। চাকরি পুনর্বহাল না করা হলে কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেন তারা।

অবস্থান কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া ব্যাংকটির চাকরিচ্যুত ক্যাশ অফিসার মো. কামাল সংবাদমাধ্যমকে বলেন, “২০ জুলাই অফিস শেষ করে বের হওয়ার সময় হঠাৎ করে ই-মেইলে একসঙ্গে আমাদের চাকরিচ্যুত করা হয়। চাকরি স্থায়ী করা হলেও কোনো কারণ ছাড়াই অব্যাহতি দেয় ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। এই বৈষম্য আমরা মানি না।”

আরেক চাকরিচ্যুত কর্মকর্তা মিজানুর রহমান বলেন, “তিন বছরের বেশি সময় ধরে আমরা এআইবি ব্যাংকে চাকরি করেছি। আমাদের স্থায়ী নিয়োগ থাকা অবস্থায় কর্তৃপক্ষ এজেন্ডা বাস্তবায়নে নতুন নিয়োগ দিচ্ছে। কোন আইনে তারা এটি করছে এর জবাব দিতে হবে।”

চাকরিচ্যুত ব্যাংক কর্মকর্তা মো. ফরহাদ হোসেন বলেন, “আমরা যোগ্যতার প্রমাণ দিয়ে কয়েক বছর কাজ করে আসছি। যদি অযোগ্য হতাম তাহলে ইনক্রিমেন্ট ও স্থায়ীকরণ করেন কী করে? ব্যাংকের নীতিমালা না মেনেই আমাদের চাকরিচ্যুত করেছেন। এটা আমরা মানি না।”

তিনি আরও বলেন, “অনেকের চাকরি শেষ পর্যায়ে। অনেকের চাকরির বয়স নেই, পরিবারে মা-বাবা অসুস্থ। হঠাৎ চাকরিচ্যুত করলে আমরা কোথায় যাব? কী কারণে আমাদের চাকরিচ্যুত করেছে তার স্পষ্ট ব্যাখ্যা না দিলে আমরা পরিবার নিয়ে আন্দোলনে যাব। দরকার হলে আমরণ অনশনে যেতে বাধ্য হব।”

এর আগে, মঙ্গলবার (২২ জুলাই) আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংকের ৫৫০ কর্মকর্তাকে অব্যাহতি দেয় ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। প্রতিষ্ঠানটির জনসংযোগ বিভাগ এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ব্যাংকের প্রশাসনিক ও সুশাসনের ধারাবাহিকতা রক্ষায় জনবল মূল্যায়ন কার্যক্রমের আওতায় এই কর্মকর্তাদের অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।

এতে আরও বলা হয়, সম্প্রতি ব্যাংকটির ব্যাংকিং কার্যক্রমের স্বচ্ছতা, ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা, দক্ষ মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা এবং আর্থিক প্রতিবেদনের মান বিষয়ে একাধিক অভ্যন্তরীণ ও বহিঃস্থ নিরীক্ষা মূল্যায়ন হয়েছে। বিভিন্ন নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষ ব্যাংকের ২০২১ সাল থেকে এন্ট্রি লেভেলে নিয়োগের ক্ষেত্রে যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয়নি বলে পর্যবেক্ষণ দিয়েছে।

এ অবস্থায় ২০২১ সালের পর থেকে যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ না করে এন্ট্রি লেভেলে নিয়োগপ্রাপ্তদের মূল্যায়নের ব্যবস্থা করা হয়। এ কার্যক্রমের অংশ হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) আইবিএর মাধ্যমে একটি নিরপেক্ষ ও মানসম্পন্ন মূল্যায়ন পরীক্ষা নেওয়া হয়। ব্যাংকটির মোট ১,৪১৪ কর্মকর্তা পরীক্ষায় অংশ নেন এবং এতে ৮৬৪ কর্মকর্তা উত্তীর্ণ হন ও ৫৫০ জন অকৃতকার্য হন।

ব্যাংকের নীতিমালা এবং দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী অকৃতকার্য কর্মকর্তাদের চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে বলে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।

About Author Information

সমালোচিত ইসলামী দুই বক্তার যত মিথ্যাচার, ইসলামী আলোচনার নামে বিভ্রান্তি ছড়ানোর অভিযোগ

আল আরাফাহ ব্যাংকের ৫৫০ কর্মকর্তা চাকরিচ্যুত, পুনর্বহালের দাবি

আপডেট : ০২:৪০:৪৫ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৬ জুলাই ২০২৫

চাকরি পুনর্বহালের দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন আল আরাফাহ ইসলামী ব্যাংকের (এআইবি) চাকরিচ্যুত কর্মকর্তারা। গত মঙ্গলবার (২২ জুলাই) আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংকের ৫৫০ কর্মকর্তাকে অব্যাহতি দেয় ব্যাংক কর্তৃপক্ষ।

বুধবার (২৩ জুলাই) রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন চাকরিচ্যুত ব্যাংক কর্মকর্তারা।

অবস্থান কর্মসূচিতে আল আরাফাহ ব্যাংকের চাকরিচ্যুত শতাধিক কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন। চাকরি পুনর্বহাল না করা হলে কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেন তারা।

অবস্থান কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া ব্যাংকটির চাকরিচ্যুত ক্যাশ অফিসার মো. কামাল সংবাদমাধ্যমকে বলেন, “২০ জুলাই অফিস শেষ করে বের হওয়ার সময় হঠাৎ করে ই-মেইলে একসঙ্গে আমাদের চাকরিচ্যুত করা হয়। চাকরি স্থায়ী করা হলেও কোনো কারণ ছাড়াই অব্যাহতি দেয় ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। এই বৈষম্য আমরা মানি না।”

আরেক চাকরিচ্যুত কর্মকর্তা মিজানুর রহমান বলেন, “তিন বছরের বেশি সময় ধরে আমরা এআইবি ব্যাংকে চাকরি করেছি। আমাদের স্থায়ী নিয়োগ থাকা অবস্থায় কর্তৃপক্ষ এজেন্ডা বাস্তবায়নে নতুন নিয়োগ দিচ্ছে। কোন আইনে তারা এটি করছে এর জবাব দিতে হবে।”

চাকরিচ্যুত ব্যাংক কর্মকর্তা মো. ফরহাদ হোসেন বলেন, “আমরা যোগ্যতার প্রমাণ দিয়ে কয়েক বছর কাজ করে আসছি। যদি অযোগ্য হতাম তাহলে ইনক্রিমেন্ট ও স্থায়ীকরণ করেন কী করে? ব্যাংকের নীতিমালা না মেনেই আমাদের চাকরিচ্যুত করেছেন। এটা আমরা মানি না।”

তিনি আরও বলেন, “অনেকের চাকরি শেষ পর্যায়ে। অনেকের চাকরির বয়স নেই, পরিবারে মা-বাবা অসুস্থ। হঠাৎ চাকরিচ্যুত করলে আমরা কোথায় যাব? কী কারণে আমাদের চাকরিচ্যুত করেছে তার স্পষ্ট ব্যাখ্যা না দিলে আমরা পরিবার নিয়ে আন্দোলনে যাব। দরকার হলে আমরণ অনশনে যেতে বাধ্য হব।”

এর আগে, মঙ্গলবার (২২ জুলাই) আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংকের ৫৫০ কর্মকর্তাকে অব্যাহতি দেয় ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। প্রতিষ্ঠানটির জনসংযোগ বিভাগ এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ব্যাংকের প্রশাসনিক ও সুশাসনের ধারাবাহিকতা রক্ষায় জনবল মূল্যায়ন কার্যক্রমের আওতায় এই কর্মকর্তাদের অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।

এতে আরও বলা হয়, সম্প্রতি ব্যাংকটির ব্যাংকিং কার্যক্রমের স্বচ্ছতা, ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা, দক্ষ মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা এবং আর্থিক প্রতিবেদনের মান বিষয়ে একাধিক অভ্যন্তরীণ ও বহিঃস্থ নিরীক্ষা মূল্যায়ন হয়েছে। বিভিন্ন নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষ ব্যাংকের ২০২১ সাল থেকে এন্ট্রি লেভেলে নিয়োগের ক্ষেত্রে যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয়নি বলে পর্যবেক্ষণ দিয়েছে।

এ অবস্থায় ২০২১ সালের পর থেকে যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ না করে এন্ট্রি লেভেলে নিয়োগপ্রাপ্তদের মূল্যায়নের ব্যবস্থা করা হয়। এ কার্যক্রমের অংশ হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) আইবিএর মাধ্যমে একটি নিরপেক্ষ ও মানসম্পন্ন মূল্যায়ন পরীক্ষা নেওয়া হয়। ব্যাংকটির মোট ১,৪১৪ কর্মকর্তা পরীক্ষায় অংশ নেন এবং এতে ৮৬৪ কর্মকর্তা উত্তীর্ণ হন ও ৫৫০ জন অকৃতকার্য হন।

ব্যাংকের নীতিমালা এবং দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী অকৃতকার্য কর্মকর্তাদের চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে বলে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।